বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবারও EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল। প্রকৃতপক্ষে, প্রায় প্রতিদিনই বড় ধরনের মৌলিক বা সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণ ছাড়াই এই পেয়ারের পতন ঘটছে। গতকাল মাত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল, যেটির ফলাফল অনুযায়ী ডলারের চেয়ে ইউরোকে বেশি সমর্থন করার কথা ছিল। অক্টোবর মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি বার্ষিক ভিত্তিতে বেড়ে 2.6%-এ পৌঁছেছে, যা বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাসের সাথে পুরোপুরি মিলে গেছে। যেহেতু কোর বা মূল মূল্যস্ফীতির ফলাফলের ক্ষেত্রে পূর্বাভাসের সাথে কোনও ভিন্নতা ছিল না, তাই মার্কেটে ডলার ক্রয় অব্যাহত থাকার জন্য কোন বৈধ কারণ ছিল না। তবুও, ডলারের মূল্য ক্রমাগত বাড়ছে, এটি আবারও প্রমাণ করে যে মার্কেটের ট্রেডাররা কেবলমাত্র ডলারের বিনিময় হারকে সঠিক লেভেলে নিয়ে আসার জন্য কাজ করছে, যা দুই বছর ধরে অযৌক্তিকভাবে দরপতনের শিকার হয়েছে। সুতরাং, আজ ও আগামীকালও এই পেয়ারের দরপতন অব্যাহত থাকতে পারে। এই পেয়ারের মূল্য ইতোমধ্যে 1.05 এর কাছাকাছি চলে এসেছে, যা এক মাস আগেও কল্পনাতীত ছিল। আমরা মনে করি এই পেয়ারের মূল্য সহজেই 1.00–1.02 এর টার্গেট রেঞ্জে পৌঁছাতে পারে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বুধবার, 5-মিনিটের টাইম ফ্রেমে বেশ কয়েকটি সিগন্যাল গঠন হয়েছিল এবং কিছু লেভেল আপডেট করা হয়েছে। মূল্য 1.0596 এর লেভেল থেকে রিবাউন্ড করেছে, এটি ব্রেক করে নিচে নেমেছে এবং 1.0557 এর লেভেল থেকে দুবার রিবাউন্ড করেছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, কোন সিগন্যালই থেকেই লোকসান হয়নি। বর্তমানে এই পেয়ারের মূল্যের বেশ উচ্চ মাত্রার ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতা বিরাজ করছে, যা প্রবণতা ভিত্তিক মার্কেটের আরেকটি চিহ্ন। 2024 সালের প্রথমার্ধে পরিলক্ষিত এই পেয়ারের মূল্য়ের নিম্ন মাত্রার ভোলাটিলিটির কথা মনে পড়ে যাচ্ছে, যখন এই পেয়ারের মূল্য দৈনিক ভিত্তিতে মাত্র 40 পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করছিল এবং কৃত্রিমভাবে মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছিল।
বৃহস্পতিবারে কীভাবে ট্রেড করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইম ফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের কারেকশন করার চেষ্টা করা হতে পারে, তবে মার্কেটের ট্রেডারদের মধ্যে ইউরো ক্রয়ের বা শর্ট পজিশনে মুনাফা নেওয়ার কোনও আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। আমরা বিশ্বাস করি যে এই পেয়ারের মূল্যের যেকোনো কারেকশন (যদি এটি শীঘ্রই ঘটে) তেমন শক্তিশালী হবে না এবং এর জন্য ইউরোকে সমর্থক যোগায় এমন সংবাদের প্রয়োজন হবে। এমনকি অনুকূল সংবাদ সবসময় ইউরোকে সহায়তা করে না, কারণ বর্তমানে মার্কেটের ট্রেডাররা ডলার ক্রয়ের উপর বেশি মনোযোগী।
বৃহস্পতিবার, আমরা মনে করি যে যদি মূল্য 1.0596 লেভেল ব্রেক করে নিচের দিকে যায় তাহলে এই পেয়ারের দরপতন অব্যাহত থাকতে পারে। আমরা এমনকি একটি ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন শুরু হলেও এই পেয়ার ক্রয়ের পরামর্শ দিচ্ছি না।
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে, ট্রেডিং করার জন্য আমাদের 1.0483, 1.0526, 1.0557, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0845-1.0851, 1.0888-1.0896, 1.0940-1.0951 এর লেভেলগুলো বিবেচনা করা উচিত। বৃহস্পতিবার ইউরোজোনে, জিডিপি এবং শিল্প উৎপাদনের মতো উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, জেরোম পাওয়েলের বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হবে এবং মাঝারি গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।