শুক্রবার, EUR/USD কারেন্সি পেয়ার আবারও উল্লেখযোগ্য দরপতনের শিকার হয়েছে। পূর্বে যেমনটি উল্লেখ করা হয়েছে, FOMC-এর বৈঠকের পরপরই মার্কেটের ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়া বা সার্বিক পরিস্থিতির উপসংহার টানা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। তাহলে আমরা কী দেখলাম এবং কী জানতে পারলাম? ফেডারেল রিজার্ভ মূল সুদের হার 0.25% কমিয়েছে (যা প্রত্যাশিত ছিল)। ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের বক্তব্যে কিছুটা হকিশ বা কঠোর অবস্থান প্রতিফলিত হয়েছে, যা এই ইঙ্গিত দেয় যে ডিসেম্বর মাসে ফেড হয়তো সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নাও নিতে পারে। যদিও এটি সুদের হার হ্রাসে নিশ্চিত বিরতি নেওয়ার কোন সংকেত নয়, পাওয়েল ট্রেডারদের তাড়াহুড়ো করে কোন উপসংহারে আসতে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, এখনও ডলারের শক্তিশালী হওয়ার জন্য প্রচুর কারণ রয়ে গেছে। এই সপ্তাহে আমাদের কী প্রত্যাশা করা উচিত? কোন বিষয়গুলোর দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত? ইউরোপীয় ইউনিয়নে কয়েকটি আকর্ষণীয় ইভেন্ট রয়েছে, তবে খুব কমই গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে এবং বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার, জার্মানিতে অক্টোবরের মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশ করবে, তবে এটি দ্বিতীয় পূর্বাভাস মাত্র। মার্কেটে ইতোমধ্যেই দেশটির মুদ্রাস্ফীতির প্রাথমিক ও বেশি গুরুত্বপূর্ণ পূর্বাভাস প্রকাশিত হয়েছে, তাই বড় পার্থক্যের সম্ভাবনা কম। ZEW অর্থনৈতিক মনোভাব সূচকও প্রকাশিত হবে তবে এটিকে গুরুত্বপূর্ণ সূচক হিসাবে বিবেচনা করা হয় না। বৃহস্পতিবার ইউরোজোনের তৃতীয় প্রান্তিকের জিডিপি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, তবে এটি দ্বিতীয় (এবং সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ) পূর্বাভাস। ইউরোজোনের শিল্প উৎপাদন প্রতিবেদনও প্রকাশিত হবে, তবে এটি মার্কেট সেন্টিমেন্টের পরিবর্তন ঘটাবে না বা ডলার কেনার ব্যাপারে ট্রেডারদের নিরুৎসাহিত করবে না। সোমবার, বুধবার এবং শুক্রবার জার্মানি এবং ইউরোজোনের অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে মূলত তেমন কিছু নেই।
তাই, এই সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়নে তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নেই বলে বিবেচনা করা যায়। ফলে আমরা সহজেই এই উপসংহারে আসতে পারি যে মার্কেটের ট্রেডাররা আবারও মার্কিন সামষ্টিক প্রতিবেদনের দিকে মনোনিবেশ করবে, যার মধ্যে অন্তত মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদনটিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা যায়। EUR/USD পেয়ারের সম্ভাবনা কী? কোন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত না হলে এই পেয়ারের মূল্য স্থির থাকবে এমন ধারণা ভুল। বর্তমানে, মার্কেটের ট্রেডাররা ডলার ক্রয়ের দিকেই ঝুঁকে রয়েছে। এই মনোভাব নিয়ে, বর্তমান প্রবণতা চলমান রাখতে ট্রেডারদের শক্তিশালী সামষ্টিক অর্থনৈতিক বা মৌলিক প্রেক্ষাপটের সহায়তার প্রয়োজন নেই। স্থানীয় সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমি ছাড়াই ফেডের সুদের হারের প্রভাব নির্ধারণ করা যেতে পারে। উপরন্তু, সাধারণত মার্কিন প্রতিবেদন ইউরোপীয় প্রতিবেদনের চেয়ে বেশি গুরুত্ব বহন করে।
আমরা আশা করছি, এই সপ্তাহে EUR/USD পেয়ার চাপের মধ্যে থাকবে এবং নিম্নমুখী প্রবণতা চলমান থাকবে। মুভিং এভারেজের নিচে এই পেয়ারের ট্রেড করা হচ্ছে যা নিম্নমুখী প্রবণতার ইঙ্গিত দেয়। যদিও বড় ধরনের দরপতনের সম্ভাবনা নেই, তবে যদি মার্কিন মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদনে আশ্চর্যজনক ফলাফল দেখা যায়, তবে এটি মার্কেটে উল্লেখযোগ্য মুভমেন্ট সৃষ্টি করতে পারে।
১০ নভেম্বর পর্যন্ত গত পাঁচ দিনের ট্রেডিংয়ে ইউরো/ডলার কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গড় ভোলাটিলিটি হচ্ছে ১১৮ পিপস এবং এটিকে "উচ্চমাত্রার" ভোলাটিলিটি হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। আমরা আশা করছি, সোমবারে এই পেয়ারের মূল্য 1.0608 এবং 1.0837 লেভেলের মধ্যে মুভমেন্ট প্রদর্শন করবে। হায়ার লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল নিম্নমুখী হয়েছে; এই পেয়ারের মূল্যের বৈশ্বিক নিম্নমুখী প্রবণতা এখনও অটুট রয়েছে। CCI সূচকটি ওভারসোল্ড জোনে প্রবেশ করেছে, যা একটি সম্ভাব্য রিভার্সালের ইঙ্গিত দেয়। তবে এটি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়ে থাকতে পারে।
নিকটতম সাপোর্ট লেভেল:
S1: 1.0681
S2: 1.0620
নিকটতম রেজিস্ট্যান্স লেভেল:
R1: 1.0742
R2: 1.0803
R3: 1.0864
ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:
EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট পুনরায় শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে, আমরা ধারাবাহিকভাবে মধ্যমেয়াদে ইউরোর দরপতনের পূর্বাভাস দিয়েছি এবং এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতার সম্ভাবনার পূর্বাভাস দিয়েছি। মার্কেটের ট্রেডাররা সম্ভবত ইতোমধ্যেই ফেডের ভবিষ্যত সুদের হার কমানোর বিষয়টি মূল্যায়ন করেছে। যদি তাই হয়, তাহলে ডলারের দুর্বল হওয়ার খুব কম কারণ বাকি রয়েছে। শর্ট পজিশন এখনও প্রাসঙ্গিক রয়েছে এবং লক্ষ্যমাত্রা থাকবে 1.0620 এবং 1.0608 লেভেলে, যতক্ষণ পর্যন্ত মূল্য মুভিং এভারেজের নিচে থাকে। শুধুমাত্র টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের উপর ভিত্তি করলে, যদি মূল্য মুভিং এভারেজের উপরে উঠে যায়, তবে 1.0901 এবং 1.0925 লেভেলের লক্ষ্যমাত্রায় লং পজিশন ওপেন করা সম্ভব। তবে, বর্তমানে আমরা লং পজিশন ওপেন করার পরামর্শ দিচ্ছি না।
চিত্রের ব্যাখা:
- লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল - বর্তমান প্রবণতা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। যদি উভয়ই একই দিকে পরিচালিত হয়, তাহলে এর অর্থ হল বর্তমানে প্রবণতা শক্তিশালী।
- মুভিং এভারেজ লাইন (সেটিংস 20.0, স্মুথেদ) – স্বল্পমেয়াদী প্রবণতা এবং বর্তমানে কোন দিকে ট্রেডিং করা উচিত তা নির্ধারণ করে।
- মারে লেভেল - মুভমেন্ট এবং কারেকশনের লক্ষ্য মাত্রা।
- অস্থিরতার মাত্রা (লাল লাইন) - সম্ভাব্য প্রাইস চ্যানেল যেখানে এই পেয়ারের মূল্য পরের দিন অবস্থান করবে, যা বর্তমান অস্থিরতা সূচকের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়।
- সিসিআই সূচক – এই সূচকের ওভারসোল্ড জোনে (-250-এর নীচে) বা ওভারবট জোনে (+250-এর উপরে) প্রবেশের মানে হল যে চলমান প্রবণতা বিপরীতমুখী হতে যাচ্ছে।