মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
মঙ্গলবার EUR/USD পেয়ারের মূল্য নিম্নগামী মুভমেন্ট প্রসারিত করতে বা বুলিশ কারেকশন শুরু করতে ব্যর্থ হয়েছে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক ইভেন্ট এবং মৌলিক পটভূমি থাকা সত্ত্বেও টানা দ্বিতীয় দিনের মতো এই পেয়ারের মূল্যের অস্থিরতার মাত্রা কম ছিল। বিশেষ করে, ইউরোজোনে ZEW ইনস্টিটিউট থেকে অর্থনৈতিক প্রত্যাশা সূচক প্রকাশিত হয়েছিল। যেমনটি আমরা আগেই উল্লেখ করেছিলাম, এই প্রতিবেদনগুলোকে গুরুত্বের দিক থেকে গৌণ হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের উপর কোন প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হয়নি। এই ক্ষেত্রেও একই ঘোটনা ঘটেছে। এছাড়াও, ফেডারেল রিজার্ভের প্রতিনিধি মেরি ডালি বক্তৃতা দিয়েছিলেন, যিনি বলেছিলেন যে "জরুরীভাবে" মার্কিন সুদের হার কমানোর দরকার নেই, এবং মুদ্রাস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছলে সুদের হার হ্রাস পেতে শুরু করবে।
এর বাইরেও যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। নির্মাণ খাতের প্রতিবেদনের ফলাফল পূর্বাভাসের চেয়ে নিম্নমুখী ছিল, যখন শিল্প উত্পাদনের ফলাফল প্রত্যাশার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল। অতএব, ডলার সমর্থন পায়নি, তবে এটির দরপতনও হয়নি। এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5 মিনিটের টাইমফ্রেমে দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছে, যদিও এগুলো সুনির্দিষ্ট ছিল না। এই পেয়ারের মূল্য 1.0611-1.0618 এর এরিয়া থেকে দুবার বাউন্স করেছে, কিন্তু দ্বিতীয় সিগন্যালটি কার্যকর করার কোন মানে ছিল না কারণ এটি বেশ দেরিতে গঠিত হয়েছিল। তবুও, এটি একটি সিগন্যাল ছিল এবং ট্রেডাররা লং পজিশন নিয়ে মার্কেটে এন্ট্রি করতে পারত। নতুন ট্রেডাররা প্রথম লং পজিশন থেকে মুনাফা অর্জন করতে পারেনি কারণ এই পেয়ারের মূল্য 1.0668-এর লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছায়নি।
বুধবারে ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:
এক ঘন্টার চার্টে, এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে। আমরা মনে করি যে যেকোন কারণ নির্বিশেষে ইউরোর দরপতন অব্যাহত থাকা উচিত, কারণ এটির মূল্য এখনও খুব বেশি রয়েছে, এবং সাধারণভাবে, নিম্নমুখী প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক সামষ্টিক প্রতিবেদন মার্কিন ডলারকে পূর্ণ সমর্থন প্রদান করেছে। মৌলিক পটভূমি এই ইঙ্গিত দেয় যে ইসিবি পরবর্তী সভায় সুদের কমানো শুরু করবে, যখন ফেড আরও পরে সুদের হার কমাতে পারে।
এই পেয়ারের মূল্য 1.0618-এর লেভেল অতিক্রম না করায় আরেকটি কারেকশন চেষ্টা করা হতে পারে। যদি আজ এই পেয়ারের মূল্য উল্লিখিত লেভেলের নিচে কনসলিডেট হয়, তাহলে আমরা আশা করতে পারি যে ইউরোর মূল্য 1.0568-এর দিকে নেমে যাবে।
5M চার্টের মূল লেভেলগুলো হল 1.0483, 1.0526, 1.0568, 1.0611-1.0618, 1.0668, 1.0725, 1.0785-1.0797, 1.0838-1.0856, 1.0888-1.0896, 1.0940, 1.0971-1.0981। বুধবার ইউরোজোনে মার্চের ভোক্তা মূল্য সূচকের চূড়ান্ত মান (যা সর্বদা প্রাথমিক মান চেয়ে কম আকর্ষণীয়) প্রকাশিত হবে, এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আকর্ষণীয় তেমন কিছু প্রকাশের কথা নেই। এইভাবে, সম্ভবত, আমরা একটানা তৃতীয় বিরক্তিকর দিনের অপেক্ষায় আছি।
ট্রেডিংয়ের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। যত দ্রুত এটি গঠিত হয়, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হয়।
2) যদি ফলস সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করাই ভালো।
4) ইউরোপীয় সেশনের শুরু থেকে মার্কিন ট্রেডিং সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেডগুলো খোলা উচিত যখন সমস্ত পজিশন ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) আপনি 30-মিনিটের টাইম ফ্রেমে MACD সূচক থেকে সিগন্যাল ব্যবহার করে ট্রেড করতে পারেন, তবে এটি শুধুমাত্র শক্তিশালী অস্থিরতার মধ্যে ব্যবহার করা উচিত এবং একটি স্পষ্ট প্রবণতা থাকতে হবে যা ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত হওয়া উচিত।
6) যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
চার্ট কীভাবে বুঝতে হয়:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD নির্দেশক (14, 22, এবং 3) একটি হিস্টোগ্রাম এবং একটি সিগন্যাল লাইন নিয়ে গঠিত। যখন মূল্য এগুলো অতিক্রম করে, সেটি মার্কেটে এন্ট্রির একটি সিগন্যাল। ট্রেন্ড প্যাটার্ন (চ্যানেল এবং ট্রেন্ডলাইন) এর সাথে এই সূচকটি ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা এবং অর্থনৈতিক প্রতিবেদন অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যেতে পারে এবং এগুলো একটি কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, সেগুলোর প্রকাশের সময়, আমরা মূল্যের তীব্র ওঠানামা এড়াতে যতটা সম্ভব সাবধানে ট্রেড করার বা বাজার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিই।
ফরেক্সে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখা উচিত যে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হতে হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল এবং অর্থ ব্যবস্থাপনার বিকাশ হল দীর্ঘ মেয়াদে ট্রেডিংয়ে সাফল্যের চাবিকাঠি।