বুধবার GBP/USD কারেন্সি পেয়ার "6/8" - 1.3062 এর মারে লেভেলে নেমে গিয়েছিল এবং পরবর্তীতে মারে স্তর হতে রিবাউন্ড হয়ে, একটি দুর্বল ঊর্ধ্বমুখী পুলব্যাক শুরু করেছে। উভয় প্রধান মুদ্রা জোড়া গত কয়েক দিনে প্রায় একই গতিবিধি দেখিয়েছে। এর অর্থ হলো এই মুভমেন্টের কারণসমূহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইউক্রেনে রয়েছে। পাউন্ড গত ১৫ মাসের সর্বনিম্ন স্তরের কাছাকাছি অবস্থান অব্যাহত রেখেছে এবং শীঘ্রই সম্ভবত তা অতিক্রম করতে পারে। ইউরোপীয় মুদ্রার ক্ষেত্রে, ব্রিটিশ পাউন্ডের বৃদ্ধির পক্ষে কার্যত কোনো কারণ নেই। আরো সঠিকভাবে বললে, একটি কারণ আছে আর তা হলো ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড, যা ফেডের মত ২০২২ সালে তার মূল হার বাড়াতে চলেছে। এই কারণেই সম্ভবত ইউরোর তুলনায় ডলারের বিপরীতে পাউন্ডের পতন ধীরে হচ্ছে। কিন্তু কার্যত বিশেষজ্ঞদের কেউই সন্দেহ করেন না যে এটির পতন অব্যাহত থাকবে।
গত দুই সপ্তাহ ধরে পাউন্ড অতি সীমিত প্রাইস রেঞ্জে অবস্থান করেছে। আমরা বলতে পারি সেক্ষেত্রে একটি ফ্ল্যাট অবস্থা দেখা গিয়েছিল। যাইহোক, ছোট লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেলটিও এখন নিম্নমুখী হচ্ছে, এবং অন্যান্য সমস্ত প্রবণতা সূচক ইতোমধ্যেই নিচের দিকে নির্দেশ করছে। মঙ্গলবার পাউন্ড এবং ইউরোর একযোগে পতন দেখে আমরা গতকাল কিছুটা আশ্চর্য হয়েছিলাম কারণ আইএসএম ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সূচকের এই ধরনের মুভমেন্ট উস্কে দেয়ার সম্ভাবনা অনেক কম ছিল। একটু পরে, এটি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে ঠিক কোন বিষয়টি এই মুভমেন্টকে উস্কে দিয়েছে। আসল বিষয়টি হল যে ফেডের বেশ কয়েকজন সদস্যের বক্তব্য ছিল, যারা আর্থিক নীতির বিষয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কঠোর অবস্থান বক্তব্যে তুলে ধরেছিলেন। যদিও ফেডের প্রতিনিধিরা ইতোপূর্বে সক্রিয়ভাবে রেট বৃদ্ধির গতি বাড়ানো এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা নিরপেক্ষ স্তরে আনার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে কথা বলেছে, কিন্তু এখন তারা ফেডের ব্যালেন্স শীট থেকে মর্টগেজ এবং ট্রেজারি বন্ডের দ্রুততম বিক্রির বিষয়ে কথা বলছে, যা একটি "এন্টি-কিউই" প্রোগ্রাম। ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অফ মিনিয়াপোলিসের চেয়ারম্যান লেয়াল ব্রেইনার্ড বলেছেন যে বন্ড বিক্রি মে মাসের প্রথম দিকে শুরু হতে পারে, যদিও পরবর্তী তারিখগুলো আগেই উল্লেখ করা হয়েছিল। এসব কিছু ইঙ্গিত দেয় যে ২০২২ সালে মুদ্রানীতির কঠোরতা দ্রুত হবে। এবং এই ভবিষ্যদ্বাণীটি বিশ্বাস করা খুব সহজ। আমেরিকান অর্থনীতি এগিয়ে চলছে, এর বৃদ্ধির হার ব্রিটিশ বা ইউরোপীয়দের তুলনায় অনেক বেশি, শ্রমবাজারও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে এবং সেই সাথে রয়েছে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি। হার বাড়াতে এবং ফেডের ব্যালেন্স শীট কমানোর জন্য আর কি দরকার?
কোষাগারের প্রবৃদ্ধি + গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি = ডলারের বৃদ্ধি।
স্বাভাবিকভাবেই, উপরের খবর্গুলো মার্কিন মুদ্রাকে সমর্থন করে। উপরন্তু, দশ বছরের আমেরিকান কোষাগারের প্রবৃদ্ধি ইতিমধ্যে 2.6% অতিক্রম করেছে যা তাদের একটি আকর্ষণীয় এবং খুব নিরাপদ বিনিয়োগের হাতিয়ার করে তুলেছে। এবং মূল হার বৃদ্ধির সাথে, প্রবৃদ্ধি কেবল বাড়োতেই থাকবে। সুতরাং, মার্কিন ঋণের বাজারে অর্থ প্রচলন শুরু হবে এবং বন্ড ক্রয় করতে ডলারের প্রয়োজন। তাই ডলারের চাহিদাও বাড়তে থাকবে। একই সময়ে, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেহেতু এই প্রাকৃতিক জ্বালানির কোনো একক দাম নেই এবং বিভিন্ন বাজারে এর মূল্য আলাদা, তাই আমাদের একটি নির্দিষ্ট গড় দাম নিতে হবে। বর্তমানে প্রতি 1000 ঘনমিটার গ্যাসের গড় মূল্য $1200-1300। যা বর্তমানে রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবরাহের জন্য ইউরোপ প্রদত্ত মূল্যের প্রায় পাঁচগুণ বেশি। তবে, যদি ইউরোপ রাশিয়ান গ্যাস প্রত্যাখ্যান করে, তবে অন্য কোথাও থেকে তা কিনতে হবে। বিশেষ করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আশ্বাস দিয়েছে যে তারা ইউরোপে 100% গ্যাস সরবরাহ করার জন্য প্রস্তুত। ইইউ এবং রাশিয়া তাদের গ্যাস চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসলে কে উপকৃত হবে? যথারীতি, যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপে গ্যাস বিক্রির জন্য প্রচুর অর্থ পাবে। স্বাভাবিকভাবেই, এটি তার অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে, এবং সেইসাথে মার্কিন ডলার আরও শক্তিশালী হবে। ব্রিটিশ পাউন্ডের ক্ষেত্রে, বর্তমানে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ইউরোপীয় অর্থনীতির চেয়ে অনেক বেশি স্বাধীন। ব্রিটেনের তেল এবং গ্যাস রয়েছে এবং এখন আর ২৭টি ইইউ সদস্য রাষ্ট্রের স্বার্থ একযোগে বিবেচনা করার দরকার নেই। অতএব, কেউ কেউ এমনও উপসংহারে আসতে পারে যে ডলারের এত উচ্চ চাহিদা না থাকলে পাউন্ড স্টার্লিং এর পতন হত না। কিন্তু মূলত পাউন্ডের চাহিদাও কমছে।এবং COT রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালে ব্রিটিশ মুদ্রার পতন অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
৭ এপ্রিল পর্যন্ত GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের "গড়" অস্থিরতা চিহ্নিত করা হয়েছে 69 পয়েন্ট। সুতরাং, আমরা আশা করি যে আজ বৃহস্পতিবার এই পেয়ার 1.3001 এবং 1.3139 স্তরের সীমিত চ্যানেলের মধ্যে অবস্থান করবে। হাইকেন আশি সূচকের রিভার্সাল নিম্নগামী আন্দোলনের পুনরারম্ভের সংকেত দেয়, কিন্তু পতন অব্যাহত রাখতে এই জুটিকে 1.3062 স্তরের নিচে স্থিতিশীল হতে হবে।
নিকটতম সমর্থন স্তর:
S1 - 1.3062
S2 - 1.3000
S3 - 1.2939
নিকটতম প্রতিরোধ স্তর:
R1 - 1.3123
R2 - 1.3184
R3 - 1.3245
ট্রেডিং পরামর্শ:
4-ঘন্টার টাইম-ফ্রেমে, GBP/USD পেয়ার নিম্নগামী মুভমেন্ট অব্যাহত রেখেছে। সুতরাং, এই মুহুর্তে, যদি কারেন্সি পেয়ার 1.3062 স্তরের নিচে স্থিতিশীল হয় তাহলে 1.3000 এবং 1.2939 এর লক্ষ্যমাত্রা সহ সেল অর্ডার বিবেচনা করা উচিত। এদিকে 1.3184 এবং 1.3245 স্তরের লক্ষ্যমাত্রা সহ মুভিং এভারেজের উপরে মূল্য নির্ধারণের আগে লং পজিশন খোলা উচিৎ হবে না। এই সময়ে, ফ্ল্যাট প্রবণতা শুরুর উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে।
চিত্রের ব্যাখ্যা:
রৈখিক রিগ্রেশন চ্যানেল - বর্তমান প্রবণতা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। যদি উভয়ই একই দিকে পরিচালিত হয়, তবে প্রবণতাটি এখন শক্তিশালী।
মুভিং এভারেজ লাইন (সেটিংস 20.0, মসৃণ) - স্বল্পমেয়াদী প্রবণতা এবং এখন কোন দিকে ট্রেড করা উচিত তা নির্ধারণ করে।
মারে স্তর - আন্দোলন এবং সংশোধনের লক্ষ্য মাত্রা।
অস্থিরতার মাত্রা (লাল রেখা) - বর্তমান অস্থিরতা সূচকের উপর ভিত্তি করে, সম্ভাব্য মূল্য চ্যানেল যেখানে জোড়া পরের দিন ব্যয় করবে।
CCI সূচক - এটির বেশি বিক্রি হওয়া এলাকায় (-250-এর নীচে) বা অতিরিক্ত কেনা এলাকায় (+250-এর উপরে) প্রবেশের মানে হল যে বিপরীত দিকে একটি প্রবণতা বিপরীত দিকে আসছে।